সোমবার, অক্টোবর ০৬, ২০২৫

Book Review - Shoemaker, S. J., A prophet has appeared - the rise of Islam through Christian and Jewish eyes - a sourcebook, 2021.

 

Book Review

A prophet has appeared: the rise of Islam through Christian and Jewish eyes: a sourcebook, by Stephen J. Shoemaker, University of California Press, California, 2021. ISBN 9780520971271 (epub). XII + 320 pages.

A valuable sourcebook.

Despite Robert G. Hoyland's book 'Seeing Islam as Others Saw it: a Survey & Evaluation: A Survey and Evaluation of Christian, Jewish, and Zoroastrian Writings on Early Islam', 1997 is the standard text in the matter, I chose this work by Stephen J. Shoemaker because of his declaration in the book that "in contrast to Hoyland’s book, the focus here is on the texts themselves, each of which we give in translation—something that Hoyland does only piecemeal and selectively". (Introduction of the book).

That is beneficial indeed.

However, I was extremely surprised by author's decision not to provide any reference for his opinions and information that he brought in the course of interpreting the texts in question. The author provided an explanation for this:

"As a further point of clarification, I would note that in the endnotes I frequently refer readers to my earlier publications for further clarification of various points. This pattern should not be taken as a sign of vanity—as if to suggest that only my work on these topics is worth consulting. Far from it: this is a matter of convenience. Since in these works I have already engaged a wide range of scholarship on a variety". (Introduction of the book).

I found this dangerous and extremely harmful, to say the least. How is it sufficient that you make an argument in the present book that we are reading and the reason for the argument and the reference for that information is provided in a different book, which the reader may or may not have access to?

This is to deprive the reader an opportunity to judge the propriety of the information or the argument that the author has provided and form a justified opinion in his mind on the matter he just read. It is a serious deception.

I recently read another book after finishing this one: Donner, F.M., Muhammad and the believers _ at the origins of Islam, 2010. In that book Dr. Donner does not provide an apology for not mentioning a single reference for his history book, like Dr. Shoemaker did.

Are these writers writing for young children or a mature audience? Do they want us to learn only what they are telling us?

 

Abu Raihan Muhammed Khalid, bar-at-law.

Advocate, Supreme Court of Bangladesh.

October 6th, 2025.

বুধবার, জুন ০৪, ২০২৫

কোরবানি কি আল্লাহ তায়ালার হুকুম না মানুষের হুকুম?

আবু রায়হান মুহম্মদ খালিদ[1]।

==================

ইসলাম ধর্মে প্রচলিত কোরবানির আইনটি দুই ভাগে বিভক্ত। বর্তমানে প্রচলিত ইসলামের চারটি দল বা মাজহাবের একটি হানাফি মাজহাবের আলেমগন কোরবানি করা ওয়াজিব বা বাধ্যতামূলক বলেন, আবার বাকি তিনটি মাজহাব অর্থাৎ মালিকী, শাফীই ও হানবালী মাজহাবের আলেমগন একে সুন্নতে মোয়াক্কাদা বা ঐচ্ছিক বলেন[2]।

আল্লাহ তায়ালা যদি আমাদের কোরবানি করতে আদেশ করে থাকেন তবে সেখানে কি মানুষের পছন্দ করার সুযোগ থাকতে পারে? তাতে দুই রকম মত হয় কি করে?

এতে প্রশ্ন জাগে আল্লাহ তায়ালা কি আমাদের আদৌ পশু কোরবানির আদেশ করেছেন, না মানুষ এই আইন তৈরি করেছে?

বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত মতঃ কোরবানি ওয়াজিব
----------------------------------------------
বাংলাদেশে অধিকাংশ মুসলমান নিজেদের হানাফি মাজহাবের অনুসারি মনে করে থাকে। পশু কোরবানি আমাদের দেশে ওয়াজিব বা বাধ্যতামূলক মনে করা হয়।

১। উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়া, ঢাকার মুখপত্র মাসিক আল-কাউসার[3] পত্রিকার মতে এই আইনটি নিন্মরুপঃ

“কার উপর কুরবানী ওয়াজিব

মাসআলা: প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নেসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে নিসাব হল- এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। -আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫”[4]।

আল কাউসার পত্রিকা কত্রিপক্ষ অন্যত্র উপরোক্ত দুই উৎসের সাথে তৃতীয় আরেকটি উৎস যোগ করেছেন এই ফতোয়ার সূত্র হিসেবেঃ “বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬”[5]।

২। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউনডেশন কুরবানির নিন্মবর্ণীত আইন প্রদান করেনঃ

“কুরবানির শর্তাবলী

কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার শর্ত সমুহ নিন্মরুপঃ

ক। নিসাব পরিমান মালের মালিক হওয়া। অর্থাৎ যার ওপর সাদকায়ে ফিতর ওয়াজিব, তার ওপর কুরবানিও ওয়াজিব… (আলমগীরী, ৫ম খণ্ড)”[6]।

“যার ওপর কুরবানি ওয়াজিব”

“যার নিকট থাকার জন্য ঘরবাড়ি, খানাপিনার আসবাবপত্র, ব্যবহারের কাপড়-চোপড়, সাওয়ারী ও অন্যান্য মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিস্পত্র ছাড়া সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা থাকবে, অথবা সে পরিমান অর্থ থাকবে তার ওপর কুরবানি ওয়াজিব” (আলমগীরী, ৫ম খণ্ড)”[7] ।

৩। বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় তরুন আলেম শায়খ আহমাদুল্লাহ[8] সাহেব বলেনঃ

“ফোকাহে আহনাফের মতে কোরবানির ঈদের দিন এবং কোরবানির ঈদের পরে আরও দুই দিন এই তিন দিনের মধ্যে কারও কাছে যদি এই পরিমান সম্পদ থাকে যে সম্পদ দিয়ে তিনি সাড়ে বাহান্ন তোলা রুপা কিনতে পারেন (যাকাতের নেসাব), তাহলে তার উপর কোরবানি ওয়াজিব হয়”[9]।

তিনি কোরআন আজিমের আল্লাহ তায়ালার কোন আয়াত বা কোন নির্দিষ্ট গ্রন্থের নাম না করে আইনটি “ফোকাহে আহনাফের” বা ‘হানাফি’ মাজহাবের আলেমদের উদ্ভাবিত বলে দাবী করেছেন।

ওপরে বর্ণনা করা তিনটি উৎসের আইন একই, কোরবানি ঈদের দিন যাকাতের নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক হলে কোরবানি ওয়াজিব হয়। আলেমগন এই আইনের উৎস কি দাবী করেন তা দেখতে আমরা তিনটিই সম্পূর্ণ বর্ণনা করেছি।

দেখা যায় যে এই আইনের উৎস হিসেবে আলেমগন কোন একটি নির্দিষ্ট গ্রন্থের নাম না করে একেক জন একেক গ্রন্থের নাম করে মোট ৫টি গ্রন্থের নাম প্রদান করেছেনঃ

১। আল-মুহীতুল বুরহানী[10]; ২। ফাতাওয়া তাতারখানিয়া[11]; ৩। বাদায়েউস সানায়ে[12]; ও ৪। আলমগীরী[13]। এ ছাড়াও আমরা কোরবানির শরিয়ার উৎস হিসাবে ‘রাদুল মুহতার[14]’ নামক ফতোয়া গ্রন্থের নাম দেখতে পেয়েছি। এই পাঁচটি গ্রন্থই মানুষের রচিত ফতোয়া গ্রন্থ।

বাংলাদেশে নতুন মতঃ কুরবানি ওয়াজিব নয়, সুন্নতে মুওয়াক্কাদা
----------------------------------------------------------------
আমরা গবেষণায় দেখতে পাই যে সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের আলেমগনের একটি দল কোরবানি করাকে ওয়াজিব বলছেন না, সুন্নতে মোয়াক্কাদা বলছেন। এঁরা বাংলাদেশের ‘আহলে হাদিস আন্দোলন’[15] এর আলেম।

১। “কুরবানি করা সুন্নতে মুওয়াক্কাদা। এটি ওয়াজিব নয় যে, যেকোনো মুল্যে প্রত্যেককে কুরবানি করতেই হবে। লোকেরা যাতে এটাকে ওয়াজিব মনে না করে, সেজন্য সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হযরত আবুবকর ছিদ্দীক, ওমর ফারূক, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর, আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস, বেলাল, আবু মাসঊদ আনছারী (রাঃ) প্রমুখ ছাহাবীগণ কখনো কখনো কুরবানী করতেন না। “[প্রদত্ত দলীলঃ বাইহাক্কি ৯/২৬৪ পৃ. হা/১৯৫০৬; ইরওয়ালুল গালীল হা/১১৩৯, ৪/৩৫৪; মির’আত ৫/৭২-৭৩, উছায়মিন, মাজমূ’ ফাতাওয়া ২৫/১০][16]

“যাকাত ফরজ হয় এরুপ সম্পদ থাকলে তার উপর কুরবানি করা ওয়াজিব, এ কথা ঠিক নয়। বরং সামর্থ্য থাকলে তিনি কুরবানি করবেন, নইলে নয়।[17]“

লক্ষ করুন, ওয়াজিবপন্থি বা সুন্নতপন্থি, আলেমগনের কেউই কোরবানির আইন হিসেবে কোরআন আজিমের কোন আয়াতের উল্লেখ করেন নি, আল্লাহ তায়ালার নাম উল্লেখ করেন নি, বরং মানুষের উদ্ভাবন করা আইনের কথা উল্লেখ করেছেন।

তাহলে দেখা যায় আমরা মানুষের উদ্ভাবিত আইনে কোরবানি করি, আল্লাহ তায়ালার আইনে নয়।

অথচ আল্লাহ তায়ালা আদেশ করেন যে দীনের হুকুম শুধু তিনিই দান করতে পারেনঃ আউজুবিল্লাহি মিনাশাইতানির রাজিম, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,

“কুল ইননি আলা বায়য়িনাতিন মিন রাববি ওআ-কাজজাবতুম বিহি মা ইনদি মা তাসতাজিলুনা বিহি ইনি ল-হুকমু ইললা লি-ললাহি য়াকুসসু ল-হাককা ওআ-হুওআ খায়রু ল-ফাসিলিন’, সুরা আন’আম, আয়াত নং ৫৭।

অর্থঃ “তুমি বলঃ আমি আমার রবের প্রদত্ত একটি সুস্পষ্ট উজ্জ্বল যুক্তি প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত, অথচ তোমরা সেই দলীলকে মিথ্যারোপ করছো। যে বিষয়টি তোমরা খুব তাড়াতাড়ি পেতে চাও তার এখতিয়ার আমার হাতে নেই। হুকুমের মালিক আল্লাহ ছাড়া আর কেহ নয়, তিনি সত্য ও বাস্তবানুগ কথা বর্ণনা করেন, তিনিই হচ্ছেন সর্বোত্তম ফাইসালাকারী।“(মুজিবুর রহমান অনুবাদ।)।[18]

জাজাকাল্লাহু খাইরান। সালাম, ফী আমানিল্লাহ।

তথ্যসূত্রঃ
=====
[1] এলএল,এম (চট্টগ্রাম; লন্ডন); ব্যারিস্টার-এট-ল (যুক্তরাজ্য); অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। টেলিফোনঃ 01715941751 [WhatsApp], ইমেলঃ raihan.khalid@yahoo.com। রচনাটি প্রথমে জুলাই ২০২১ খৃষ্টাব্দে রচিত ও প্রকাশিত। বর্তমান সংস্করন ৪ঠা জুন ২০২৫ খৃষ্টাব্দ তারিখে সমাপ্ত। আমি ২০১৫ সাল থেকে আর অর্থ উপার্জনের জন্য কাজ করিনা, আল্লাহ্‌র ওয়াস্তে ওকালতি ও আল্লাহ্‌র ধ্যান করি।

[2] ফতওয়া ইবনে উসাইমিন, নং ২/৬৬১। মুহাম্মাদ ইবনে সালেহ আল-উসাইমিন (১৯২৯ – ২০০১) ছিলেন বিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফকিহ। ফতোয়াটি www.islamicity.org থেকে সংগৃহীত, এ পাতায় আছেঃ https://www.islamicity.org/5512/udhiyahqurbani-obligatory-or-sunnah/। একই মত islamqa.info ও সমর্থন করে। দেখুন https://islamqa.info/en/answers/36432/what-is-udhiyah, একই দিনে পরীক্ষিত। ইবনে উসাইমিন সম্পর্কে জানতে দেখুন উইকিপিডিয়াঃ https://shorturl.at/z8Oe8। সকল ওয়েবলিঙ্ক ০৪.০৬.২০২৫ তারিখে পরীক্ষিত।

[3] পত্রিকার ওয়েবসাইটঃ https://www.alkawsar.com/bn/। মাসিক আলকাউসার । সম্পাদক ও প্রকাশক: আবুল হাসান মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ । সম্পাদকীয় বিভাগ, মারকাযুদ্ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা, হযরতপুর, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা – ১৩১৩, ফোন : ০১৯৮৪ ৯৯ ৮৮ ২২, ই-মেইল : info@alkawsar.com, Facebook পেজঃ https://www.facebook.com/alkawsarbd

[4] কুরবানী সংক্রান্ত কিছু জরুরি মাসায়েল, মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া, যিলহজ্ব ১৪৩৮, সেপ্টেম্বর ২০১৭, https://www.alkawsar.com/bn/article/2154/, ০২রা জুন ২০২৫ তারিখে শেষবার পরীক্ষিত।

[5] মাসিক আলকাউসার - The Monthly Al Kawsar এর ফেসবুক পেজ এ ২৩ জুলাই ২০২০ খৃষ্টাব্দে প্রকাশিত কুরবানী বিষয়ক প্রশ্ন-উত্তর (১ম পর্ব), উত্তর প্রদানে: ফতোয়া বিভাগ, মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা, https://www.facebook.com/alkawsarbd/posts/pfbid02tZSLV2ZgK3ctvfDorYCfSN35NkDxRGUxTcSbSQ9NqExf4ftEUhNKGQ9vbYRLpFTGl, ০২ জুন ২০২৫ তারিখে শেষবার পরীক্ষিত।

[6] ইফা, কুরবানি ও আকিকা সংক্রান্ত মাসআলা-মাসায়েল, সম্পাদনা পরিষদ, ইসলামিক ফাউনডেশন, ঢাকা, তৃতীয় সংস্করণ, অক্টোবর ২০১১, ISBN: 984-06-1036-9, পৃষ্ঠা ৯, ১০।

[7] ইফা, ২০১১, ঐ, পৃষ্ঠা ১১।

[8] শায়খ আহমাদুল্লাহর জন্ম ১৫ ডিসেম্বর ১৯৮১ সালে লক্ষ্মীপুর জেলার বশিকপুরে। তিনি আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন নামক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, গ্রন্থ রচয়িতা ও অনলাইনে তাঁর বহু বক্তব্যের চলচিত্র পাওয়া যায়। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের ভূমিপল্লী জামে মসজিদের খতীবের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর ওয়েবসাইটঃ https://ahmadullah.info/

[9] শায়খ আহমাদুল্লাহ, কুরবানী বিষয়ক প্রশ্নোত্তর। পর্ব-২৬৩, https://www.youtube.com/@sheikhahmadullahofficial এ প্রকাশিতঃ https://www.youtube.com/watch?v=X3QByZqHdHo, ০৩.০৬.২০২৫ তারিখে পরীক্ষিত।

[10] আল-মুহীতুল বুরহানী বইটির সম্পূর্ণ নাম ‘Al-Muhit Al-Burhani fi Al-Fiqh Al-Nu'mani, Fiqh Imam Abu Hanifa’, আর এর রচয়িতার নাম Abu Al-Maali Burhan Al-Din Mahmoud Ibn Ahmed Ibn Abdul-Aziz Ibn Omar Ibn Maza Al-Bukhari (D. 616 A.H, অর্থাৎ ১২১৯ খৃষ্টাব্দ)। তাঁর নাম Shaikh Mahmood Ibn Mazah Al Bukhari হিসেবেও সংক্ষেপে লেখা হয়।

[11] আল্ ফতোয়া তাতারখানিয়া দিল্লীতে রচিত একটি ফতোয়ার বই। এটি লিখেছেন শেইখ আলিম বিন আলা ইন্দরপতি, ইনি ১৩৮১ খৃষ্টাব্দে মৃত্যু বরন করেন। বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ https://www.muftisays.com/forums/books/8690/fatawa-tatarkhaniya--for-ulema.html, ০৪.০৬.২০২৫ তারিখে পরীক্ষিত।

[12] এই বইটির পূর্ণ নাম ‘Bada'i' as-Sana'i' fi Tartib ash-Shara'i'’ (Marvellous artistry in the arrangement of the religious-legal regulations)[13], এটি রচনা করেছেন ইমাম কাসানি। ইমাম কাসানির পূর্ণ নাম “'Ala' al-Din al-Kasani, known as Al-Kasani or al-Kashani, was a 12th Century Sunni Muslim Jurist who became an influential figure of the Hanafi school of Sunni jurisprudence”[14]। ইনি ১১৯১ খৃষ্টাব্দে মৃত্যুবরন করেন। দেখুন উইকিপিডিয়া, Al-Kasani https://en.wikipedia.org/wiki/Al-Kasani?fbclid=IwZXh0bgNhZW0CMTAAYnJpZBExc0dFVEh6UEF3bU5VSWRuQQEeRlOQhytvTHF9YITy4Ua7OxZ91vpwHz3vXR2ELuI89FDxauN-sRS1WXgQUyg_aem_pyNuq671Ii_hz-7gYiGr4A

[13] ‘আলমগীরী’ হল ‘ফতোয়ায়ে আলমগিরি’। গ্রন্থটি আল-ফাতাওয়া আল-হিন্দীয়া বা আল-ফাতাওয়া আল-আলমকিরীয়া নামেও পরিচিত। মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের নির্দেশে এই সংকলন প্রণীত হয়। ১৭ শতকে ভারতে বাদশাহ আওরঙ্গজেব ৩ নভেম্বর ১৬১৮ – ৩ মার্চ ১৭০৭) এর শাসনামলে এই ফতোয়া গ্রন্থটি রচিত হয়। বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%B2-%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%93%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE_%E0%A6%86%E0%A6%B2-%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE#cite_note-6, ০৪.০৬.২০২৫ তারিখে পরীক্ষিত।

[14] রাদ আল-মুহতার গ্রন্থের পূর্ণ নাম ‘রাদ্দুল মুহতার আলাদ দুররিল মুখতার’। এই ফতোয়া গ্রন্থের রচয়িতা ইবনে আবিদিন। পুরো নাম মুহাম্মাদ আমিন বিন ওমর বিন আবদিল আজিজ আবিদিন আল-দামিশকি (১৭৮৪-১৮৩৬)। তিনি ইবনে আবেদিন শামি নামে সুপরিচিত। রাদ আল-মুহতার গ্রন্থটি ‘ফতোয়ায়ে শামী’ নামে অধিক পরিচিত। বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ https://en.wikipedia.org/wiki/Radd_al-Muhtar; ও লেখন ইবনে আবিদিন এর জন্যঃ https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%87%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%87_%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%A8, ০৪.০৬.২০২৫ তারিখে পরিক্ষিত।

[15] আহলে হাদিস আন্দোলন এর মূল ওয়েবসাইটঃ https://ahlehadeethbd.org/index.html, ০৪.০৬.২০২৫ তারিখে পরীক্ষিত।

[16] ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, অধ্যাপক (অবঃ), আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, পৃষ্ঠা ১১, আল-গালিব, ম,আ, মাসায়েলে কুরবানি ও আক্কিকা, হাদিছ ফাউনডেশন বাংলাদেশ, রাজশাহী, ষষ্ঠ সংস্করন, ২০২০।

[17] আল-গালিব, ম,আ, ঐ।

[18] , সুরা আন’আম, আয়াত নং ৫৭। ভাষ্য, উচ্চারন ও অনুবাদঃ https://quranhadithbd.com/sura/6?s=57।

রবিবার, মে ১৮, ২০২৫

বিদেশী ইউক্যাপিলটাস ও আকাশমণি আমাদের কি ক্ষতি করে?

বিদেশী আগ্রাসী এই সব বৃক্ষ অধিক হারে রোপণ করার ফলে দেশের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

এর ফলে দেশের পরিবেশ, প্রকৃতি, বন্যপ্রাণী, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ - এসবের ক্ষতি হচ্ছে বলে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
গত কয়েক বৎসর শেরপুর, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে একের পর এক হাতী বন থেকে বের হয়ে খাবারের সন্ধানে মানুষের কৃষি জমিতে নেমে আসছে ও মানুষের পাতা বিদ্যুতের তারের ফাঁদে জড়িয়ে মারা যাচ্ছে, অনেক মানুষও হাতীর আক্রমণে মারা যাচ্ছেন। ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী “বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৪ সাল থেকে গত ১৭ বছরে মানুষের হাতে হত্যার শিকার হয়েছে ১১৮টি হাতি” (১)। গত চার বৎসরে মারা গেছে আরও অনেক হাতী।
হাতীদের কৃষি জমিতে নেমে আসার কারন পাহাড়ের বনে সব আকাশমণির বাগান, তাতে আর হাতীর খাদ্য নেই। পূর্বে বনে বাঁশ ও বন্য গাছগাছালির অরন্য ছিল, হাতী ও অন্যান্য বন্য প্রাণী তা আহার করতো। হাতী ছাড়াও বানর, হরিন, বাঘ সহ অন্যান্য সকল বন্যপ্রাণীর সংখ্যাও আবাসভুমি কেটে আকাশমণির বাগান করায় প্রায় শুনের কোঠায়। বন্য প্রানিরা লোকালয়ে নেমে এসে মানুষের হাতে নিহত হচ্ছে।
বাংলাদেশের গ্রামের প্রধান বৃক্ষ এখন মেহগনি, বনে সামাজিক বনায়নের আকাশমণি। দেশীয় গাছপালা দেশেই সংখ্যালঘু হয়ে বিলুপ্তির পথে। এর ফলে জীববৈচিত্র্য, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির সন্মুক্ষিন।
দেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষার সিদ্ধান্তটি ২০২৫ সালের নয়, এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো ২০১১ সালে। ২০১১ সালে জাতী সংবিধানে বন বিষয়ে তার উদ্দেশ্য ও নীতি নির্ধারণ করেন। আর তা হলঃ
"পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়ন
১৮ক। রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীব-বৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণির সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করিবেন।" (২)
এই সংবিধানের ১৮ক অণুচ্ছেদে বর্ণীত উদ্দেশ্য পুরনকল্পে অনেক আগেই ইউক্যালিপটাস, আকাশিয়া ও অন্যান্য বিদেশী গাছ দেশে নিষিদ্ধ করা আইনগত ভাবে রাষ্ট্রের ওপর বাধ্যতামুলক ছিল। কোন কারনে পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও বন বিভাগ এই ১৪ বৎসর তা বাস্তবায়ন না করে সংবিধান লঙ্ঘন করে আসছিলেন। এবার তার কিছু নিরসন হল।
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী দেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষার স্বার্থে যে সোকল বিদেশী প্রজাতি দেশের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করছে তাদের নির্মূল করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধঃ দেখুন Convention on Biological Diversity, 1992 (CBD) বলছেঃ
Article 8. In-situ Conservation
Each Contracting Party shall, as far as possible and as appropriate:
"(h) Prevent the introduction of, control or eradicate those alien species which threaten ecosystems, habitats or species;" (৩)
তথ্যসুত্রঃ
=====
(১) হাতি: বাংলাদেশে একের পর এক এই বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর পেছনে কারণ কী, সানজানা চৌধুরী, বিবিসি বাংলা, ঢাকা, ১৩ নভেম্বর ২০২১।
https://www.bbc.com/bengali/news-59257659, ১৮.০৫.২০২৫ তারিখে পরীক্ষিত।
(২) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান, ১৮ক অনুচ্ছেদঃ http://bdlaws.minlaw.gov.bd/act-details-957.html
(৩) Convention on biological diversity. Rio de Janeiro, 5 June 1992
https://treaties.un.org/.../19920605.../ch_xxvii_08p.pdf, ১৮.০৫.২০২৫ তারিখে পরীক্ষিত।

মঙ্গলবার, মার্চ ০৪, ২০২৫

রোজা বা উপবাস যে আল্লাহ তায়ালার আইন নয়, বরং মানুষের সৃষ্টি করা আইন তা বোঝার উপায়

রোজা বা উপবাস যে আল্লাহ তায়ালার আইন নয়, বরং মানুষের সৃষ্টি করা আইন তা বোঝার উপায়

আবু রায়হান মুহম্মদ খালিদ, বার-এট-ল।

=============================

আমি উপবাস করিনা। উপবাসের আইন বর্তমান কোরআন আজিমে অন্তর্ভুক্ত আছে বটে, কিন্ত আমার জ্ঞানত তা জালিয়াতি করে অন্তর্ভুক্ত করেছে মানুষ।

আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেনঃ কর্মে কে উত্তম তা পরীক্ষা করতে[1]। উপবাস আমাদের স্বাভাবিক কর্ম নয়, এ বাহ্যিক আচরন মাত্র, মানুষের উদ্ভাবন।

রোজা বা উপবাস যে আল্লাহ তায়ালার আইন নয়, বরং মানুষের সৃষ্টি করা আইন তা বোঝার উপায়ঃ

উপবাস বা যে কোন প্রচলিত ইবাদত প্রকৃত ইসলামের ইবাদত কিনা তা পরীক্ষা করার দুইটি ধাপ আছেঃ

১। রোজা বা উপবাসের শরিয়াটি আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত বিবেকের মাপকাঠিতে বিচার করে নেয়া; এবং

২। কোরআন আজিম বিকৃত হয়েছে, তা জানা।

১। রোজা বা উপবাসের শরিয়া আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত বিবেকের মাপকাঠিতে বিচার করে নেয়া।

সংযমের পরিবর্তে বরং অধিক ভোগ ও দুর্নীতি হচ্ছে রমজান মাসে। তাই এটা আল্লাহ তায়ালার আইন হতে পারে না। আল্লাহ তায়ালার আইন মানলে তার ফল অশুভ বা ক্ষতিকর হতে পারে না, যেমন হয়েছে রোজার ক্ষেত্রে।

প্রকৃত সংযম সাধনা রয়েছে আপন প্রবৃত্তি বা নফস দমনে, উপবাসে বছরে একমাস প্রবৃত্তির এক অংশ অর্থাৎ খাদ্য গ্রহনের বাসনার দমনের অভিনয় করা হয় মাত্র, মূলত সকলে এই এক মাসে অন্য সময়ের চেয়ে অধিক খাদ্য পানীয় ভোগ করে থাকেন। এই এক মাসে সকলের খাদ্য পানীয়, বস্ত্র ও অন্য ভোগ বাবদ ব্যায় প্রকৃতপক্ষে বৎসরের অন্য যে কোন মাসের চেয়ে অধিক হয়ে থাকে। তবে এই এক মাসে সংযম কোথায়?

এ সময় দোকাদার ও ব্যবসায়ীগন বৎসরের অন্য সময়ের চেয়ে অধিক অর্থ উপার্জন করেন এবং তা করতে গিয়ে অধিক মিথ্যা কথা বলা, মজুতদারী করা- করে থাকেন।

সমাজের অন্যরাও এ মাসে অধিক হারাম কাজ যেমন অতিরিক্ত ব্যায়ের অর্থ যোগাতে অধিক ঘুষ গ্রহণ, বা অধিক অপব্যায় করে থাকেন।

এই মাস সংযমের নয় বরং নফসের বা প্রবৃত্তির ইবাদতের হয়ে উঠেছে।

এ ইসলামের ইবাদত নয়। আল্লাহ তায়ালা সারা বছরই প্রবৃত্তি বা নফসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে আদেশ করেছেন, বছরের একমাস নয়। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, আউজুবিল্লাহি মিনাশাইতানির রাজিম, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

“ওআ-আমমা মান খাফা মাকামা রাববিহি ওআ-নাহা ন-নাফসা আনি ল-হাওআ; ফা-ইননা ল-জাননাতা হিয়া ল-মাওআ” সুরা আন-নাযি'আত, আয়াত অং ৪০, ৪১ (৭৯:৪০, ৪১) ।

অর্থঃ “আর যে স্বীয় রবের সামনে দাঁড়ানোকে ভয় করে এবং কুপ্রবৃত্তি থেকে নিজকে বিরত রাখে; নিশ্চয় জান্নাত হবে তার আবাসস্থল” (আল-বায়ান অনুবাদ) ।[2]

তাহলে দেখা যায় বছরে একমাস শুধু পানাহার ভোগ থেকে নিজেকে নিবৃত রাখা নয় বরং সারা বৎসরই কুপ্রবৃত্তির হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে আদেশ করেন আল্লাহ তায়ালা।

বর্তমানে ইসলাম ধর্মের নামে বহু জাল ইবাদত প্রচলিত আছে। ইসলাম ধর্মে অসংখ্য ভাগ বা মাজহাব সৃষ্টি হয়েছে এই সব জাল ইবাদতকে কেন্দ্র করে। কেউ বলেন পীরের হুকুম মানা শিরক, কেউ বলেন যার পীর নেই তার পীর শয়তান। কেউ বলেন ইমাম মানতে হবে, কেউ বলেন ইমাম মানা শিরক। কেউ তারাবী নামাজ জামাতের সাথে পড়েন, কেউ পড়েন না। কেউ বলেন তারাবী ৮ কেউ বলেন ২০ রাকাত। আগে বলতেন ছবি তোলা হারাম, এখন হজ করতে গেলেই ছবি লাগে। তা আর হারাম নয়। কেউ বলেন পশু বলি দেয়া বা কোরবানি ওয়াজিব, কেউ বলেন তা সুন্নাহ। এভাবে প্রয়োজন মত শরিয়া নিত্য আবিষ্কার হচ্ছে ও পরিবর্তিত হচ্ছে। এ আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছাতেই হচ্ছে। আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছা এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে তিনি এর মধ্য দিয়ে তিনি মুত্তাকী বেছে নিবেন।

তাহলে আমরা কি করে বুঝবো কোনটি প্রকৃত আল্লাহ তায়ালার বিধান? আমার বিবেক ও বিবেচনা শক্তি, কোরআন আজিমে আল্লাহ তায়ালা একে ‘আফইদাত’ বা অন্তকরণ বলে অবহিত করেছেন। এই আফইদাত দিয়ে বিচার করে চিনে নিতে হবে কোনটি আল্লাহ তায়ালার আইন আর কোনটি মানুষের সৃষ্টি করা আইন।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

“কুল হুওআ ললাজি আনশাআকুম ওআ-জাআলা লাকুমু স-সামা ওআ-ল-আবসারা ওআ-ল-আফিদাতা কালিলান মা তাশকুরুন”, সুরা আল- মুলক, আয়াত নং ২৩।

অর্থঃ “বল, ‘তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে দিয়েছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও অন্তঃকরণ। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাক। (তাফসীরে আহসানুল বায়ান) ।[3]

আল্লাহ তায়ালা আরও ইরশাদ করেন, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

“ওআ-নাফসিন ওআ-মা সাওওআহা; ফা-আলহামাহা ফুজুরাহা ওআ-তাকোআহা”, সুরা আশ-শামস, আয়াত ৭ ও ৮।

অর্থঃ “কসম নাফসের এবং যিনি তা সুসম করেছেন” । (আল-বায়ান অনুবাদ); “অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন” ।[4]

ভালো-মন্দ, অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান আল্লাহ তায়ালা আমাদের অন্তরের মধ্যেই দান করেছেন, আর তা ব্যবহার করে আমাদের প্রত্যেককে নিজের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোনটি আল্লাহ তায়ালার হিদায়াত ও কোনটি মানুষের তৈরি করা মিথ্যা।

২। কোরআন আজিম বিকৃত হয়েছে, তা জানা

কোরআন আজিম যে বিকৃত হয়েছে তার দলীল আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং ইরশাদ করেছেন; কোরআন আজিমেই। বিস্তারিত বলছি।

আল্লাহ তায়াআ ইরশাদ করেন যে তিনিই ‘যিকরা’ বা যে সকল কিতাব আল্লাহ তায়ালা মানুষের নিকট প্রেরণ করেন, তার সংরক্ষক। আল্লাহ তায়ালা ইরশদ করেন, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

“ইননা নাহনু নাযযালনা জ-জিকরা ওআ-ইননা লাহু লা-হাফিযুন”, সুরা হিজর, আয়াত নং ৯ (কোরআন ১৫:৯) ।

অর্থঃ “আমিই জিকর অবতীর্ণ করেছি এবং আমিই উহার সংরক্ষক” । (মুজিবুর রহমান অনুবাদ)।[5]

এখানে লক্ষ করুন আল্লাহ তায়ালা কোরআন আজিমের নাম না ধরে একে যিকরা বলেছেন। যিকরা কি? সংক্ষেপে বলছি, যিকরা হল যা স্মরণ করিয়ে দেয়, অনেকে এর অনুবাদ স্মরণিকা[6] বা ইংরেজিতে ‘Reminder’[7] করেছেন। আদম সন্তানের সাথে আল্লাহ তায়ালার যে আদি চুক্তি হয়েছে গায়েবের জগতে[8], সে চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দিতে আল্লাহ তায়ালা ৫০০ বা হাজার বৎসরের বিরতির পর একটি একটি কিতাব এক এক জন রাসুলুল্লাহ এর মাধ্যমে দুনিয়েতে প্রেরণ করেন। যখন মানুষ আল্লায় তায়ালার সাথে তাদের চুক্তির কথা ভুলে গিয়ে পাপ কর্মে নিমজ্জিত হয়, আল্লাহ তায়ালা তখন একটি স্মরণিকা প্রেরণ করে তাদের তাঁর পথে ফিরে আসতে আহ্বান করেন ও সতর্ক সঙ্কেত প্রদান করে ভয় দেখান। এই জন্য কিতাবকে আল্লাহ তায়ালা স্মরণিকা বা reminder নামে অবহিত করেন।

সকল আসমানি কিতাবই জিকরা, কোরআন আজিম একা জিকরা নয়।

বিশেষ করে লক্ষ করুন যে কোরআন আজিম আল্লাহ তায়ালা প্রেরিত আর সকল কিতাবের চেয়ে আলাদা নয়, এ পূর্বে প্রেরিত সকল গ্রন্থের অনুরুপ, বা ‘মুসাদদিকান লি-মা মাআকুম’ (কোরআন ২:৪১, এবং আরও অনেক আয়াত) । এই কারনেই সুরা হিজরের ৯ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা কোরআন আজিমের নাম না ধরে একে যিকরা বলে আসমানি কিতাবের সাধারন নামে একে অবহিত করেছেন। যাতে মানুষ কোরআন আজিমকে অন্য কিতাব থেকে আলাদা কিছু মনে না করে। আল্লাহ তায়ালা প্রেরিত সকল কিতাবই যিকরা, কোরআন আজিম একা যিকরা নয়।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন যে তিনি রাসুলুল্লাহ মুসা কে ‘যিকরা’ দান করেছেনঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

“ওআ-লা-কাদ আতায়না মুসা ওআ-হারুনা ল-ফুরকানা ওআ-দিয়াআন ওআ-জিকরান লি-ল-মুততাকিন”, সুরা আল-আম্বিয়া, আয়াত ৪৮।

অর্থঃ “আর আমি তো মূসা ও হারূনকে সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী দিয়েছিলাম এবং মুত্তাকীদের জন্য দিয়েছিলাম জ্যোতি ও উপদেশ (‘যিকরা’) (আল-বায়ান অনুবাদ) ।[9]

আরও দেখুন, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

“ওআ-মা আরসালনা মিন কাবলিকা ইললা রিজালান নুহি ইলায়হিম ফা-সালু আহলা জ-জিকরি ইন কুনতুম লা তালামুন, সুরা আন-নাহাল, আয়াত নং ৪৩।

অর্থঃ “আর আমি তোমার পূর্বে কেবল পুরুষদেরকেই রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছি, যাদের প্রতি আমি ওহী পাঠিয়েছি। সুতরাং জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা কর, যদি তোমরা না জানো” ।[10]

লক্ষ করুন আল্লাহ তায়ালা এখানে পূর্বতন উম্মতদের “আহলা জ-জিকরি” বা যাদের যিকরা দেয়া হয়েছে সে সমস্ত মানুষ বলে ইরশাদ করেছেন, অর্থাৎ সকল কওমকেই যিকরা দেয়া হয়েছে, কোরআন আজিম একা যিকরা নয়।

এই কিতাব সংরক্ষিত আছে লাওহে মাহফুজে। সেখানে একে সংরক্ষনের কথাই আল্লাহ তায়ালা সুরা হিজরের ৯ নং আয়াতে উল্লেখ করেছেন। কারন আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

“ইননাহু লা-কুরানুন কারিম”, “ফি কিতাবিন মাকনুন” সুরা ওয়াকিয়া, আয়াত ৭৭ ও ৭৮ (কোরআন ৫৬ঃ৭৭ ও ৭৮)

অর্থঃ “নিশ্চয় এটি মহিমান্বিত কুরআন; যা আছে সুরক্ষিত কিতাবে,” (আল-বায়ান অনুবাদ) ।[11]

আরও দেখুন, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

“বাল হুওআ কুরানুন মাজিদ; ফি লাওহিন মাহফুয”, সুরা আল বুরুজ, আয়াত নং ২১ ও ২২

অর্থঃ “বরং তা সম্মানিত কুরআন।; সুরক্ষিত ফলকে” (আল-বায়ান অনুবাদ।) ।[12]

দেখুন, কোরআন আজিম সুরক্ষিত, কিন্তু কোথায়? লাওহে মাহফুজে; পৃথিবীতে নয়। আল্লাহ তায়ালা তা স্পষ্ট করেই বলেছেন আরেক আয়াতে, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

“ইননা জাআলনাহু কুরানান আরাবিয়য়ান লাআললাকুম তাকিলুন; ওআ-ইননাহু ফি উমমি ল-কিতাবি লাদায়না লা-আলিয়য়ুন হাকিম”, সুরা আয-যুখরুফ, আয়াত নং ৩ ও ৪।

অর্থঃ “আমি ওটাকে করেছি আরবী ভাষার কুরআন যাতে তোমরা বুঝতে পার; আমার কাছে তা উম্মুল কিতাবে সংরক্ষিত আছে, আর তা হল অতি উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন জ্ঞান-বিজ্ঞানে পূর্ণ।“(তাইসিরুল অনুবাদ)।[13]

দেখুনঃ কোরআন আজিম সংরক্ষিত আছে, কিন্তু কোথায়? উম্মুল কিতাব বা লাওহে মাহফুজে।

তাহলে দেখুন এই কোরআন আজিম এবং আল্লাহ তায়ালা প্রেরিত সকল কিতাবই জিকরা বা স্মরণিকা, এবং এই সকলের উৎস হল উম্মুল কিতাব, যা আল্লাহ তায়ালা লাওহে মাহফুজে সংরক্ষিত করে রেখেছেন। এবং এই সংরক্ষন করার কথাই সুরা হিজরের ৯ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন।

কোরআন আজিম বিকৃত হয়েছে – আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন

দুনিয়াতে প্রেরনের পর মানুষ আল্লাহ তায়ালার সকল কিতাবকেই বিকৃত করেছে, তাওরাত বিকৃত হয়েছে, ইঞ্জিল বিকৃত হয়েছে, কোরআন আজিম বিকৃত হয়েছে। আর তা আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং কোরআন আজিমে ইরশাদ করেছেন। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিমঃ

"ইননা ললাজিনা য়ুলহিদুনা ফি আয়াতিনা লা য়াখফাওনা আলায়না আ-ফা-মান য়ুলকা ফি ন-নারি খায়রুন আম মান য়াতি আমিনান য়াওমা ল-কিয়ামাতি”, সুরা হা-মীম আস-সাজদা, আয়াত নং ৪০। (কোরআন ৪১ঃ৪০)

অর্থঃ “নিশ্চয় যারা আমার আয়াতসমূহ বিকৃত করে তারা আমার অগোচরে নয়। যে অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত হবে সে কি উত্তম, না যে কিয়ামত দিবসে নিরাপদভাবে উপস্থিত হবে? তোমাদের যা ইচ্ছা আমল কর। নিশ্চয় তোমরা যা আমল কর তিনি তার সম্যক দ্রষ্টা।“(আল-বায়ান অনুবাদ)।[14]

আয়াতে ইরশাদ হওয়া ‘য়ুলহিদুনা’ শব্দের মাসদার ل ح د। এর অর্থ “to distort, to pervert”[15]; “distort”[16]। অর্থাৎ বিকৃত করা।

তাহলে দেখুন আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং ইরশাদ করেছেন যে কোরআন আজিম বিকৃত হয়েছে, এবং তা হয়েছে রাসুলুল্লাহ মুহম্মদ এর জীবন কালেই, কোরআন আজিম যখন নাজিল হচ্ছিল সেই ২৩ বৎসরের মধ্যেই।

আল্লাহ তায়ালা নিজেই ইরশাদ করেছেন যে কোরআন আজিম বিকৃত হয়েছে, আবার আল্লাহ তায়ালা নিজেই বলেছেন যে তিনি যিকরা সংরুক্ষন করবেন। তাহলে কি এই দুই আয়াত পরস্পর বিরোধী?

না, তা নয়। যদি আমরা বুঝতে পারি যে কোরআন আজিম ও সকল জিকরা সংরক্ষিত আছে লাওহে মাহফুজে, আর দুনিয়াতে কোরআন আজিম ও সকল আসমানি কিতাব বিকৃত হচ্ছে, তাহলে আর সংঘর্ষ থাকে না।

জাজাকাল্লাহু খাইরান। ফী আমানিল্লাহ।

রেফারেন্সঃ

[1] সুরা আল-কাহফ, আয়াত নং ৭, https://quranhadithbd.com/sura/18?s=7; সুরা আল-মুলক, আয়াত নং ২, https://quranhadithbd.com/sura/67?s=2  

[2] ভাষ্য, উচ্চারন ও অনুবাদঃ https://quranhadithbd.com/sura/79?s=40

[3] ভাষ্য, উচ্চারন ও অনুবাদঃ https://quranhadithbd.com/sura/67?s=23

[4] ভাষ্য, উচ্চারন ও অনুবাদঃ https://quranhadithbd.com/sura/91?s=7

[5] ভাষ্য, উচ্চারন ও অনুবাদঃ https://quranhadithbd.com/sura/15

[6] দেখুন সূরা আন-নাহাল, আয়াত: ৪৪, https://quranhadithbd.com/sura/16?s=44

[7] Badawi, E.M.; Haleem, M.A., Arabic-english Dictionary of Qur’anic Usage, Brill, Leiden – Boston, 2008. ISBN: 9789004149489. পৃষ্ঠা নং ৩৩১। আমরা বইটির একটি ইবুক সংস্করন ব্যবহার করেছি। এ ছাড়াও একটি অনলাইন ডাটাবেইজ এর অভিধান একই তথ্য দেয়, দেখুন আরবি জাল-কাফ-রা বর্ণত্রয়ে গঠিত যে সকল শব্দ কোরআন আজিমে আছে, তার তালিকাঃ https://corpus.quran.com/qurandictionary.jsp?q=*kr#(15:9:4)

[8] দেখুন সুরা আল-আ'রাফ আয়াত নং ১৭২, https://quranhadithbd.com/sura/7?s=171। মানুষের অন্তরেই আল্লাহ তায়ালা ভালো মন্দ বিচার করার ক্ষমতা দান করেছেনঃ এ কথা অন্য আরও আয়াতেও ইরশাদ হয়েছে, যেমন দেখুন সুরা আশ-শামস, আয়াত ৭ ও ৮, উৎস উপরে প্রদত্ত।

[9] ভাষ্য, উচ্চারন ও অনুবাদঃ https://quranhadithbd.com/sura/21?s=49

[10] ভাষ্য, উচ্চারন ও অনুবাদঃ https://quranhadithbd.com/sura/16?s=44

[11] ভাষ্য, উচ্চারন ও অনুবাদঃ https://quranhadithbd.com/sura/56?s=77

[12] ভাষ্য, উচ্চারন ও অনুবাদঃ https://quranhadithbd.com/sura/85?s=21  

[13] ভাষ্য, উচ্চারন ও অনুবাদঃ https://quranhadithbd.com/sura/43?s=4

[14] ভাষ্য, উচ্চারন ও অনুবাদঃ https://quranhadithbd.com/sura/41?s=41। কোরআন আজিম যে বিকৃত হয়েছে তা আল্লাহ তায়ালা কোরআন আজিমের আরও অনেক আয়াতে সরাসরি উল্লেখ করেছেন, দেখুনঃ সুরা বাকারা, আয়াত নং ৭৫; সুরা বাকারা, আয়াত নং ৭৯; সুরা আল-ইমরান, আয়াত নং ৭৮, ইত্যাদি।

[15] Badawi, E.M.; Haleem, M.A., ঐ, পৃষ্ঠা নং ৮৩৭।

[16] https://corpus.quran.com/qurandictionary.jsp?q=lHd#(41:40:3)

রবিবার, জুন ১৬, ২০২৪

কোরবানি ইসলামিক নয় - ঈদ উল আযহার দিন বাড়িতে কোরবানি করতে আল্লাহ্‌ তায়ালা হুকুম করেন নি।

আবু রায়হান মুহম্মদ খালিদ[1]

 সারাংশঃ

কোরবানির আইন হল যে কোন মুসলমান নিসাব পরিমান, অর্থাৎ সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মালিক হলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। কিন্তু এ আইন আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের ওপর আদেশ করেন নি। আল্লার তায়ালা প্রেরিত গ্রন্থ আল কুর’আনুল আজিমের কোথাও এই আইনের একটি কথাও নেই। এ সকল  মানুষের রচিত ফতোয়া বা মানুষের আইন। কোরবানি ওয়াজিব হওয়ার আইনের দলীল হিসেবে আল কোর’আনুল আজিমের কোন আয়াত কেউ কোথাও দাখিল করেন নি। তাই কোরবানি ইসলামিক নয়।

সুচনাঃ

প্রথম এই প্রশ্নটি করুনঃ কোরবানি করার শরিয়া বা আইন কি ও তা কোথায় আছে?

উৎস সহ কোরবানির আইনটি খুঁজে পাওয়া কঠিন। অধিকাংশ রচনায় শুধু আইনটি বলা আছে; সে আইন কোন গ্রন্থ বা উৎস থেকে নেয়া, তার তথ্য দেয়া নেই। আমরা অনেক অনুসন্ধান করে বাংলাদেশে প্রকাশিত রচিত এই নির্ভরযোগ্য উৎসগুলো খুঁজে পেয়েছিঃ

১। উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়া, ঢাকার মুখপত্র মাসিক আল-কাউসার[2] পত্রিকার মতে এই আইনটি নিন্মরুপঃ

“কার উপর কুরবানী ওয়াজিব

মাসআলা: প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নেসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে নিসাব হল- এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। -আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫”[3]

ফতোয়া আরকাইভ নামে একটি ডিজিটাল বাংলা ভাষার ফতোয়া সংগ্রহ ওপরের এই ফতওয়াটি উদ্দ্রিত করেছে[4]

আল কাউসার পত্রিকা কত্রিপক্ষ অন্যত্র উপরোক্ত দুই উৎসের সাথে তৃতীয় আরেকটি উৎস যোগ করেছেন এই ফতোয়ার সূত্র হিসেবেঃ “বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬,”[5]

২। মুফতি মোহাম্মদ শোয়েইব, সম্পাদক, মাসিক আল-হেরা, তাঁর ইংরেজি ভাষায় রচিত “রুলস অফ কুরবানি, (১১ আগস্ট, ২০১৯ তারিখে ডেইলি সান পত্রিকায় প্রকাশিত রচনায় কোরবানির আইন বর্ণনা করেনঃ

“On whom Qurbani is Wajib (obligatory)?

It is obligatory for every adult Muslim male and female who has the ownership of wealth equivalent to 612.36g of silver or 87.48g of gold on the Day of Eid-ul-Azha from 10st Zil-Hajj Fajr to 12 Zil-Hajj sunset. (Raddul Muhtar p.171 v.3)”[6].

৩। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউনডেশন কুরবানির নিন্মবর্ণীত আইন প্রদান করেনঃ

“কুরবানির শর্তাবলী

কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার শর্ত সমুহ নিন্মরুপঃ

ক। নিসাব পরিমান মালের মালিক হওয়া। অর্থাৎ যার ওপর সাদকায়ে ফিতর ওয়াজিব, তার ওপর কুরবানিও ওয়াজিব… (আলমগীরী, ৫ম খণ্ড)”[7]

“যার ওপর কুরবানি ওয়াজিব”

“যার নিকট থাকার জন্য ঘরবাড়ি, খানাপিনার আসবাবপত্র, ব্যবহারের কাপড়-চোপড়, সাওয়ারী ও অন্যান্য মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিস্পত্র ছাড়া সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা থাকবে, অথবা সে পরিমান অরথ থাকবে তাঁর ওপর কুরবানি ওয়াজিব” (আলমগীরী, ৫ম খণ্ড)”[8]

তাহলে কোরবানির আইনের উৎস হিসেবে আলেমগন ৫টি গ্রন্থের নাম প্রদান করেছেনঃ

১। আলমুহীতুল বুরহানী;

২। ফাতাওয়া তাতারখানিয়া;

৩। বাদায়েউস সানায়ে; ও

৪। Raddul Muhtar

৫। আলমগীরী

এখন আমরা দেখবো এই গ্রন্থ পাঁচটি কারা রচনা করেছেন।

১। আল মুহীতুল বুরহানী

আল-মুহীতুল বুরহানী একটি খুব প্রচলিত ফতোয়ার বই। বইটির সম্পূর্ণ নাম ‘Al-Muhit Al-Burhani fi Al-Fiqh Al-Nu'mani, Fiqh Imam Abu Hanifa’, আর এর রচয়িতার নাম Abu Al-Maali Burhan Al-Din Mahmoud Ibn Ahmed Ibn Abdul-Aziz Ibn Omar Ibn Maza Al-Bukhari (D. 616 A.H)[9]এই লেখকের সম্বন্ধে অনেক খুঁজেও আমরা তেমন কোন তথ্য পাইনি, যদিও এঁর বইটি মুসলমানদের মধ্যে সারা দুনিয়েতে বিখ্যাততাঁর নাম Shaikh Mahmood Ibn Mazah Al Bukhari হিসেবেও সংক্ষেপে লেখা হয়[10]

২। ফাতাওয়া তাতারখানিয়া

আল্ ফতোয়া তাতারখানিয়া দিল্লীতে রচিত একটি ফতোয়ার বই। এটি লিখেছেন শেইখ আলিম বিন আলা ইন্দরপতি, ইনি ১৩৮১ খৃষ্টাব্দে মৃত্যু বরন করেন (তথ্যসুত্র নিন্মে প্রদত্ত)। এর সম্বন্ধে অনুসন্ধান করে আমরা এই তথ্য পেয়েছিঃ

“Fatawa Tatarkhania is an early and authentic text on Hanafi Jurisprudence from Delhi. It is considered as one of the greatest Islamic heritages and academic masterpiece left behind by the Delhi Sultanate in India. This compilation serves as the encyclopedia of Islamic jurisprudence and fatwa literature. It is considered one of the reference books for the future works on Hanafi Fiqh. It was compiled by Shaykh ‘Aalim bin ‘Ala Indarpati (d. 1381/786AH) in the reign of Sultan Feroz Shah Tughlaq (i.e. 1351-1389), but it was attributed to a notable noble Tatar Khan for his patronage of learning class and ulama”[11].

“Tatarkhniya is now published in 23 thick volumes and 14300 pages, containing 33778 rulings and more than 10000 references from the Quran and Hadith”[12].

৩। বাদায়েউস সানায়ে

এই বইটির পূর্ণ নাম ‘Bada'i' as-Sana'i' fi Tartib ash-Shara'i'’ (Marvellous artistry in the arrangement of the religious-legal regulations)[13], এটি রচনা করেছেন ইমাম কাসানি। ইমাম কাসানির পূর্ণ নাম “'Ala' al-Din al-Kasani, known as Al-Kasani or al-Kashani, was a 12th Century Sunni Muslim Jurist who became an influential figure of the Hanafi school of Sunni jurisprudence”[14]। ইনি ১১৯১ খৃষ্টাব্দে মৃত্যুবরন করেন[15]

৪। Raddul Muhtar (রাদ্দ আল-মুহতার)

অনুসন্ধানে এই বইটি সম্পর্কে নিন্মবর্ণীত তথ্য জানা যায়ঃ

“Radd al-Muhtār 'ala al-Durr al-Mukhtār is a book on Islamic jurisprudence (fiqh) by 18th century Islamic scholar, Ibn 'Abidin, whose title translates to "Guiding the Baffled to The Exquisite Pearl".

Radd al-Muhtar is a "hashiyah" (an annotative commentary) on `Ala' al-Din al-Haskafi's work of Islamic jurisprudence, Durr al-Mukhtār fi Sharh Tanwīr al-Absār. It is widely considered as the central reference for fatwa in the Hanafi school of Sunni legal interpretation. Scholars of the Indian subcontinent often refer to Ibn Abidin as "al-Shami" and to this hashiyah as "al-Shamiyya" or "Fatawa Shami".[16]

বইটির লেখক ইবনে আবিদিন, তাঁর পূর্ণ নাম “Muammad Amīn ibn ʿUmar ibn ʿAbd al-ʿAzīz ibn Amad in ʿAbd ar-Raḥīm ibn Najmuddīn ibn Muammad alāḥuddīn al-Shāmī, died 1836 CE / AH 1252),[3][4] known in the Indian subcontinent as al-Shami, was an Islamic scholar and Jurist who lived in the city of Damascus in Syria during the Ottoman era”[17]

৫। আলমগীরী

‘আলমগীরী’ হল ‘ফতোয়ায়ে আলমগিরি’। অনুসন্ধানে আমরা বইটি সম্পর্কে এই তথ্য জানতে পারিঃ “কথিত আছে যে, ১০০ হানাফি আলেম কিতাবটির সম্পাদনায় অংশগ্রহণ করেন। সম্পাদক-মন্ডলীর সভাপতি ছিলেন শায়খ নিজামুদ্দিন। তার জন্ম তারিখ পাওয়া যায় না। তার মৃত্যু ১১০৩ হিজরীতে বলে জানা যায়। ফতোয়ায়ে-হিন্দীয়া লেখা হয় ১১০৩ হিজরীতে”[18]

“আল-ফাতাওয়া আল-হিন্দীয়া বা আল-ফাতাওয়া আল-আলমকিরীয়া নামেও পরিচিত একটি ইসলামী আইন সংকলন, যা ৫৪ বছর ধরে অধিকাংশ ভারতীয় উপমহাদেশের রাষ্ট্রশিল্প, সাধারণ নৈতিকতা, সামরিক কৌশল, অর্থনৈতিক নীতি, ন্যায় বিচার এবং শাস্তির উপর আইন সংকলন ছিল। মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের নির্দেশে এই সংকলন প্রণীত হয়।"ভারতে তৈরি মুসলিম আইনের সর্বশ্রেষ্ঠ নিদর্শন" হিসাবে ঘোষণা করা হয়, সংকলনটি ব্যাপকভাবে ইসলামিক আইনশাস্ত্রের (ফিকহ) ক্ষেত্রে সবচেয়ে সুসংগঠিত কাজগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়েছে”[19]

তাহলে দেখা যায় যে কোরবানি যে আইনে ওয়াজিব বা বাধ্যতামূলক হয়, তা আল্লাহ্‌ তায়ালার আইন নয়। আল্লার তায়ালা প্রেরিত গ্রন্থ আল কুর’আনুল আজিমের কোথাও এই আইনের একটি কথাও নেই। এ সকল  মানুষের রচিত ফতোয়া বা মানুষের আইন। কোরবানি ওয়াজিব হওয়ার আইনের দলীল হিসেবে আল কোর’আনুল আজিমের কোন আয়াত কেউ কোথাও দাখিল করেন নি।

দীনের আইন দেয়ার অধিকার একমাত্র আল্লাহ্‌ তায়ালার, মানুষের দীনের আইন দেয়ার কোন অধিকার নেই। আল্লাহ্‌ তায়ালা আল কুর’আনুল আজিমে ইরশাদ করেনঃ আউজুবিলাহি মিনাশাইতানির রাজিম, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,

"কুল ইননি আলা বায়য়িনাতিন মিন রাববি ওআ-কাজজাবতুম বিহি মা ইনদি মা তাসতাজিলুনা বিহি ইনি ল-হুকমু ইললা লি-ললাহি য়াকুসসু ল-হাককা ওআ-হুওআ খায়রু ল-ফাসিলিন", সুরা আন'আম, আয়াত ৫৭।

অর্থঃ "তুমি বলঃ আমি আমার রবের প্রদত্ত একটি সুস্পষ্ট উজ্জ্বল যুক্তি প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত, অথচ তোমরা সেই দলীলকে মিথ্যারোপ করছো। যে বিষয়টি তোমরা খুব তাড়াতাড়ি পেতে চাও তার এখতিয়ার আমার হাতে নেই। হুকুমের মালিক আল্লাহ ছাড়া আর কেহ নয়, তিনি সত্য ও বাস্তবানুগ কথা বর্ণনা করেন, তিনিই হচ্ছেন সর্বোত্তম ফাইসালাকারী।" (মুজিবুর রহমান এর অনুবাদ)

ভাষ্য, উচ্চারন ও অনুবাদঃ https://quranhadithbd.com/sura/6?s=57

একই বক্তব্য সুরা ইউসুফের ৪০ নং আয়াতেঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,

"মা তাবুদুনা মিন দুনিহি ইললা আসমাআন সামমায়তুমুহা আনতুম ওআ-আবাউকুম মা আনযালা ললাহু বিহা মিন সুলতানিন ইনি ল-হুকমু ইললা লি-ললাহি আমারা আললা তাবুদু ইললা ইয়য়াহু জালিকা দ-দিনু ল-কায়য়িমু ওআ-লাকিননা আকসারা ন-নাসি লা য়ালামুন", সুরা ইউসুফ, আয়াত ৪০

অর্থঃ "তাকে ছেড়ে তোমরা শুধু এমন কতকগুলি নামের উপাসনা করছ যা তোমরা এবং তোমাদের পিতৃপুরুষরা রেখে নিয়েছ। এইগুলির কোন প্রমাণ আল্লাহ অবতীর্ণ করেননি। বিধান দেওয়ার অধিকার শুধু আল্লাহরই। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তিনি ছাড়া আর কারোও উপাসনা করবে না। এটাই সরল-সঠিক দ্বীন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটা অবগত নয়।" [তাফসীরে আহসানুল বায়ান অনুবাদ]

ভাষ্য, উচ্চারণ, ও অনুবাদঃ https://quranhadithbd.com/sura/12

লক্ষ্য করুন আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন "ইনি ল-হুকমু ইললা লি-ললাহি", অর্থাৎ "বিধান দেওয়ার অধিকার শুধু আল্লাহরই"। আর কেউ, এমনকি নবী রসূলগনও, হুকুম বা আদেশ নিষেধ দিতে বা জারি করতে পারেন না।

অতএব, ওয়াজিব বা বাধ্যতামূলক দীনের ইবাদত মনে করে আমরা যে ঈদুল আযহার দীনে পশু কোরবানি ক্রি, তা আল্লাহ্‌ তায়ালার হুকুম নয়, মানুষের হুকুম। আল্লাহ্‌ তায়ালা তাঁর ব্ব্যাতিত অন্যের হুকুম দেয়ার অধিকার দেন নি। মানুষের হুকুম মেনে ইবাদত করলে এতে সে মানুষের ইবাদত হয়, আল্লাহ্‌ তায়ালার ইবাদত হয় না।

আল্লাহ্‌ ব্যাতিত অন্য কারো ইবাদত করা শিরক।



[1] ব্যারিস্টার; অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। টেলিফোনঃ 01715941751; রচনাটি ১৬ই জুন ২০২৪ খৃষ্টাব্দ তারিখে রচিত।

[2] পত্রিকার ওয়েবসাইটঃ https://www.alkawsar.com/bn/। মাসিক আলকাউসার । সম্পাদক ও প্রকাশক: আবুল হাসান মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ । সম্পাদকীয় বিভাগ, মারকাযুদ্ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা, হযরতপুর, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা – ১৩১৩, ফোন : ০১৯৮৪ ৯৯ ৮৮ ২২, ই-মেইল : info@alkawsar.com, Facebook পেজঃ https://www.facebook.com/alkawsarbd

[3] কুরবানী সংক্রান্ত কিছু জরুরি মাসায়েল, মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া, যিলহজ্ব ১৪৩৮,  সেপ্টেম্বর ২০১৭, https://www.alkawsar.com/bn/article/2154/, ১৬ জুন ২০২৪ তারিখে শেষবার পরীক্ষিত।

[4] ফতোয়া আরকাইভ, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা, মুফতি আব্দুর রহমান আব্দে রাব্বি, হেড অব ইফতা ডিপার্টমেন্ট,   https://fatwaarchive.com/fatwa/%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF-%E0%A6%93%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%AC-%E0%A6%B9%E0%A6%93%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%B6%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%82%E0%A6%B9, ১৬ই জুন, ২০২৪ তারিখে পরীক্ষিত। যোগাযোগঃ ইমেলঃ contact@fatwaarchive.com; WhatsApp: +880 1823-674090

[5] মাসিক আলকাউসার - The Monthly Al Kawsar এর ফেসবুক পেজ এ ২৩ জুলাই ২০২০ খৃষ্টাব্দে প্রকাশিত কুরবানী বিষয়ক প্রশ্ন-উত্তর (১ম পর্ব), উত্তর প্রদানে: ফতোয়া বিভাগ, মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা, https://www.facebook.com/alkawsarbd/posts/pfbid02tZSLV2ZgK3ctvfDorYCfSN35NkDxRGUxTcSbSQ9NqExf4ftEUhNKGQ9vbYRLpFTGl, ১৬ জুন ২০২৪ তারিখে শেষবার পরীক্ষিত।

[6] Rules of Qurbani, Mufti Muhammad Shoaibb, Publish: Saturday, 10 August, 2019, এখানে পাওয়া যাবেঃ https://www.daily-sun.com/printversion/details/414821, ১৬ জুন ২০২৪ তারিখে শেষবার পরীক্ষিত।

[7] ইফা, কুরবানি ও আকিকা সংক্রান্ত মাসআলা-মাসায়েল, সম্পাদনা পরিষদ, ইসলামিক ফাউনডেশন, ঢাকা, তৃতীয় সংস্করণ, অক্টোবর ২০১১, ISBN: 984-06-1036-9, পৃষ্ঠা ৯, ১০।

[8] ইফা, ২০১১, ঐ, পৃষ্ঠা ১১।

[9] Khalil, M.B.M.; Nassar, S.H. (2021), The Chosen Opinion of Imam Al-Asbijabi in His Explanation of The Summary of Al-Tahawi A Comparison Fiqhi Studypurification of Wells as A Sample,

 [10] অনলাইন বইয়ের দোকান কিতাবুন ডট কম বইটি Al Muhit al-Burhani fi Fiqh al-Numani নামে নয় ভলিউমে বইটি বিক্রি করছেঃ https://kitaabun.com/shopping3/muhit-burhani-fiqh-numani-arabic-only-p-4893.html, ১৬ জুন ২০২৪ তারিখে এই লিঙ্ক পরীক্ষিত।

[11] মাদানি বুক স্টোর এর ওয়েবসাইটঃ https://islam786books.com/index.php?main_page=product_info&products_id=6444, ১৬ জুন ২০২৪ তারিখে পরীক্ষিত।

[12] Qasmi, M.K. (2017), The Orientation and Approach of Indian Ulama in Resolving Contemporary Issues through Islamic

Jurisprudence in Modern India, published at Academia.edu, https://www.academia.edu/37196041/The_Orientation_and_Approach_of_Indian_Ulama_in_Resolving_Contemporary_Issues_through_Islamic_Jurisprudence, ১৬ জুন, ২০২৪ তারিখা পরীক্ষিত।

[13] উইকিপিডিয়া, https://en.wikipedia.org/wiki/Bada%27i%27_al-Sana%27i%27, ১৬ জুন, ২০২৪ তারিখা পরীক্ষিত।

[14] উইকিপিডিয়া, https://en.wikipedia.org/wiki/Al-Kasani, ১৬ জুন ২০২৪ তারিখে পরীক্ষিত।

[15] উৎসঃ ঐ।

[16] উইকিপিডিয়া, https://en.wikipedia.org/wiki/Radd_al-Muhtar, ১৬ জুন ২০২৪ তারিখে পরীক্ষিত।

[17] উইকিপিডিয়া, https://en.wikipedia.org/wiki/Ibn_Abidin, ১৬ জুন ২০২৪ তারিখে পরীক্ষিত।

[18] উইকিপিডিয়া, আল-ফাতাওয়া আল-হিন্দীয়া, https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%B2-%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%93%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE_%E0%A6%86%E0%A6%B2-%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE, ১৬ জুন ২০২৪ তারিখে পরীক্ষিত।

[19] উইকিপিডিয়া, আল-ফাতাওয়া আল-হিন্দীয়া, ঐ।